ক্ষমতার পালা বদলের সাথে সাথে বদল হয় হাট-বাজার-মাঠ-ঘাট। এটা যেন এখন সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে এমনই অবস্থা। ইলিশের মোকাম হিসেবে পরিচিত বরিশাল নগরের পোর্ট রোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের কথাই বলছি । যখন যারা ক্ষমতায় থাকেন তখন তাদের দলের নেতাকর্মীরা নগরের পোর্ট রোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নেন। ক্ষমতার দাপটে আড়তদারদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয় অতিরিক্ত খাজনা। ইলিশের দামও নির্ধারণ করে দেন তারা। তবে বর্তমানে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় থাকলেও বিএনপির নেতাকর্মীরা ইলিশ মোকামের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছেন। বাজারের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করছেন তারা। একইসঙ্গে বদলে দিয়েছেন মোকামের সাইনবোর্ড। বারে বারে এই পরিবর্তন ও নতুন করে তাদের মর্জিমত ইলিশের দাম নির্ধারণে ক্ষুব্ধ বিক্রেতা ও আড়তদাররা ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ৫ আগস্ট ক্ষমতার পটপরিবর্তনের পর সম্প্রতি শহীদ জিয়া মৎস্য পাইকারি অবতরণ কেন্দ্র সংবলিত সাইনবোর্ড টানিয়ে দেওয়া হয়। তবে এটি বছরের পর বছর ধরে ইলিশের মোকাম হিসেবে ব্যবসায়ীদের কাছে পরিচিত। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা থাকাকালে স্থানীয় নেতাকর্মীরা ক্ষমতার দাপট দেখাতে দুবার বরিশাল নগরের পোর্ট রোড মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের নামের সাইনবোর্ড পরিবর্তন করেছেন। ২০০৮ সালে তৎকালীন বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি শওকত হোসেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের নামের সাইনবোর্ড পরিবর্তন করে এলাকার নাম অনুসারে রসুলপুর মার্কেট হিসেবে এই মৎস্য কেন্দ্রের নামের সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেন। ২০১৮ সালে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ ওই নাম পরিবর্তন করে বরিশাল জেলা মৎস্য পাইকারি অবতরণ কেন্দ্র সংবলিত সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেন।
মোকামের একাধিক মাছ বিক্রেতা ও ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, ৫ আগস্টের পর আবারও মোকামের নাম পরিবর্তন হয়েছে। আগের সাইনবোর্ডের নিচে শহীদ জিয়ার নাম জুড়ে নতুন সাইনবোর্ড টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার আগে শহীদ জিয়ার নামেই সাইনবোর্ড ছিল। পরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা দুবার সেই সাইনবোর্ড পরিবর্তন করেছেন। যখন যারাই ক্ষমতায় থেকেছেন তাদের নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণে থাকে এই মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র। বাজার ঘিরে গড়ে তোলা হয় সিন্ডিকেট। বছর বছর বাড়ানো হয় খাজনা। বেঁধে দেওয়া হয় মাছের দামও। এক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের কিছুই করার থাকে না। ৫ আগস্টের পর আবারও মোকামের নাম পরিবর্তন হয়েছে। আগের সাইনবোর্ডের নিচে শহীদ জিয়ার নাম জুড়ে নতুন সাইনবোর্ড টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার আগে শহীদ জিয়ার নামেই সাইনবোর্ড ছিল। পরে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা দুবার সেই সাইনবোর্ড পরিবর্তন করেছেন।
এই বিষয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আগে এবং বর্তমানে যে সাইনবোর্ড টানানো হয়েছে সেটি সরকারি কাগজে-কলমে নেই। কী নামে আছে, তা অনেকে জানেও না।’ ‘ক্ষমতার পালাবদলে পোর্ট রোড পাইকারি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের নাম পরিবর্তন হয়। আগেও বেশ কয়েকবার নাম পরিবর্তন হয়েছিল। এখন আবার পরিবর্তন করে নতুন নাম দেওয়া হয়েছে। ‘বছরের পর বছর ধরে কাগজ-কলমে চলে আসছে পদ্মাবতী-হাটখোলা লেবার হ্যান্ডলিং মাছঘাট নামে। কীর্তনখোলা নদীর সঙ্গে সংযোগ পোর্ট রোড খাল দিয়ে ওই হাটে বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন স্থান থেকে ট্রলার ভর্তি করে মাছ আসতো। সেই মাছ ট্রলার থেকে তুলে পাইকারিতে হাটে বিক্রি হতো। সেখান থেকে মাছ চলে যেতো বিভাগের বিভিন্ন বাজার থেকে শুরু করে দেশের নানা স্থানে। সেটিকে কেন্দ্র করেই নামকরণ হয়েছে। তবে পরবর্তীতে এটি ইলিশের মোকাম হিসেবে অত্যাধিক পরিচিতি পায়। বছর বছর এটি লিজ দেওয়া হয়। লিজ দেওয়ার সময় সরকারিভাবে যে নাম আছে, সেই নামই ব্যবহার হয়ে আসছে।’