বরফ গলে বেরিয়ে এল একটি পা !

 

চিত্র-বিচিত্র ডেস্ক ::
মাউন্ট এভারেস্টের বরফ গলে বেরিয়ে এল একটি পা! সেই পায়ে হোঁচট খেলেন ন্যাশনাল জিওগ্রাফির তথ্যচিত্র বানাতে যাওয়া বিখ্যাত পর্বতারোহী জিমি চিন। এই পা নিয়ে রীতিমতো হইচই পড়ে গেছে সংশ্লিষ্ট সব মহলে। কারণ, এই পা শত বছর আগে এভারেস্ট অভিযানে যাওয়া ব্রিটিশ পর্বতারোহী Andrew_Irvine (Sandry)-র হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম BBC News -এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এভারেস্টে সম্প্রতি পাওয়া সেই পা যদি পর্বতারোহী অ্যান্ড্রু কোমিন ‘স্যান্ড্রি’-র হয়, তাহলে এটি শত বছর বয়সী এক রহস্যের সমাধান করবে। এমনকি এই পায়ের সূত্র ধরে বদলে যেতে পারে এভারেস্ট জয়ের ইতিহাসও।
১৯২৪ সালের জুন মাসে একজন সঙ্গী #GeorgeMallory সহ এভারেস্ট শৃঙ্গের উদ্দেশে পর্বতারোহণ শুরু করেন আরভিন। সেই যে যাওয়া, তারপর তিনি নিখোঁজ। আরভিন মাত্র ২২ বছর বয়সে নিখোঁজ হলেও তাঁর এই নিখোঁজের বয়স ১০০ বছর পেরিয়েছে চলতি বছরের জুনে। আরভিনের সঙ্গী জর্জ ম্যালোরির দেহাবশেষ পাওয়া গেলেও অনেক খোঁজাখুঁজির পরও আরভিনের শরীর অনাবিষ্কৃত থেকে যায়। কিন্তু গত মাসেই ন্যাশনাল জিওগ্রাফির তথ্যচিত্র বানাতে এক দল পর্বতারোহী এভারেস্টে যান। সেখানে একটা কিছুতে হোঁচট খান ওই দলের পর্বতারোহী জিমি চিন। তা বের করে এনে তাঁরা দেখেন সেটা একটি পায়ের অংশ।
দলটির নেতৃত্বে থাকা বিখ্যাত পর্বতারোহী জিমি চিন এই আবিষ্কারকে ‘আবেগপূর্ণ এক মাইলফলক’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন। কারণ, আরভিন ও তাঁর সঙ্গী যদি সফল হতেন, বা তাঁরা সফল হয়েছেন এমন কোনো প্রমাণ যদি পাওয়া যেত, তাহলে সেই অর্জন হতো প্রখ্যাত পর্বতারোহী ও ইতিহাসে অমর হয়ে থাকা এডমন্ড হিলারি ও তেনজিং নোরগের আগে। কত আগে? ২৯ বছর।
আরভিন ও তাঁর সঙ্গীর নিখোঁজ হওয়া এই সাফল্য‑ব্যর্থতা সম্পর্কিত ধন্ধের মীমাংসায় বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সমস্যার সমাধানে কম অনুসন্ধান হয়নি। বছরের পর বছর অনুসন্ধানকারীরা আরভিনের শরীরের খোঁজ করেছেন। আরভিনের সাথে ক্যামেরা থাকায়, তাঁর দেহের দেখা মিললে বিষয়টির একটি সমাধান পাওয়া যেত। কারণ, পর্বতশৃঙ্গ জয় করলে আরভিন নিশ্চয় সাথে থাকা ক্যামেরায় তার প্রমাণ রাখতে চাইবেন।
ন্যাশনাল জিওগ্রাফি জানায়, ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে ডিএনএ নমুনা বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করছে যে এই পা আরভিনেরই কিনা। যদিও ন্যাশনাল জিওগ্রাফির তথ্যচিত্র নির্মাতা দল এক রকম নিশ্চিত যে, এই পা আরভিনেরই। কারণ, এই পায়ে পরে থাকা মোজায় লেখা আছে–‘এ সি আরভিন’। আর সেই লেবেলে আরভিনের নামই লেখা। গত মাসে, অর্থাৎ সেপ্টেম্বরে এভারেস্টের উত্তরমুখো সেন্ট্রাল রংবুক গ্ল্যাসিয়ারে এই পা পাওয়া গেছে। এই পথ পাড়ি দেওয়ার সময় তাঁরা আরও নানা জিনিস পেয়েছেন। এর মধ্যে ১৯৩৩ সালের লেবেল সাঁটা একটি অক্সিজেন বোতলের কথা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। ওই বছর এভারেস্ট অভিযানে যাওয়া একটি দল আরভিনের কিছু জিনিস উদ্ধার করেছিল। ফলে এই সম্ভাবনা তীব্র হয়েছে যে, ওই পায়ের প্রাপ্তিস্থানের আশপাশেই আরভিনের শরীরের দেখা মিলতে পারে। অনুসন্ধান কি তথ্যের সন্ধান দেয় তারই অপেক্ষায়।