চট্টগ্রামের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সুদীর্ঘকালের আবহে গড়ে উঠেছে। কী নেই বন্দরনগরী চট্টগ্রামে।পাহাড় থেকে সাগর,নদী, সমতল সবকিছুই আমাদের মায়ার বাঁধনে বেঁধে রেখেছে।চট্টগ্রামে যতগুলো নান্দনিক দর্শণীয় জায়গা আছে তার মধ্যে বাটালী হিল অন্যতম। বাটালী হিলকে অনেকে জিলিপির মতো প্যাঁচানো বলে জিলিপি পাহাড়ও বলে।বাটালী হিল চট্টগ্রাম শহরের সবচেয়ে উঁচু পাহাড়।এর উচ্চতা প্রায় ২৮০ফুট।বাটালী হিলের অবস্থান,চট্টগ্রাম শহরের জিরো পয়েন্ট থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে টাইগারপাস এলাকায়।চট্টগ্রাম শহরের লালখান বাজার এলাকার, ইস্পাহানী মোড়ের, উত্তরে ফাহিম মিউজিকের পাশ দিয়ে উপরের দিকে উঠে গেছে, জিলিপির মতো রাস্তা।জিলিপির মতো প্যাঁচানো বলে অনেকে বাটালী হিলকে জিলিপি পাহাড়ও বলে।এই রাস্তা ম্যাজিস্ট্রেট কলোনীর পেছন দিকে চলে গেছে।জিলিপি বাংলাদেশের একটি অন্যতম মিষ্টি খাবার, বাটালী হিলের রাস্তাটিও জিলিপির মতো। তাই উঠার সময়, অন্যরকম চমৎকার এক অনুভূতি হবে।বাটালী হিলের উপরে উঠে আপনি কিছু সময়ের জন্য জিরিয়ে নিতে বা বিশ্রাম নিতে পারেন।সর্বোচ্চ এই উঁচু চূড়াটিকে বলে শতায়ু অঙ্গন।বাটালী হিলের সর্বোচ্চ চূড়ায় উঠলে আপনি এক নজরে পুরো চট্টগ্রাম শহরকে দেখে নিতে পারবেন ও মোটামোটি একটি ধারণা হয়ে যাবে আপনার।তাছাড়া প্রতিদিন, ভোরের মুক্ত বাতাসে,লোকজন হাঁটাহাঁটি ও হালকা ব্যায়াম করেন।প্রতিদিন অনেক দর্শনার্থী এখানে পরিবার নিয়ে বেড়াতে আসেন, তাদের মধ্যে অনেক প্রেমিক যুগলও বলা যায়, যারা প্রকৃতি ও চিরসবুজ গাছপালার সাথে ছবি তুলে স্মৃতিগুলো ক্যামেরাবন্দী করে নেন।কেউবা সতেজ বাতাসে,শ্বাস নেন ও বঙ্গোপসাগরের সূর্যাস্তের শ্বাসরুদ্ধকর দৃশ্য উপভোগ করেন। সেই সাথে নানা প্রজাতির পাখিদের কিচিরমিচির ডাক আপনি অবশ্যই শুনতে পাবেন।অনেক বছর আগে,দূর সমুদ্রের চলাচলকারী জাহাজকে দিক নির্দেশনার জন্য বাটালী হিলের উপর একটি বাতিঘর ছিলো।২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় বাটালী হিলের উপরে,একটি কামান বসানো হয়।বিগত ২০০৩-২০০৫সাল পর্যন্ত,বাটালী হিলে,বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সৌজন্যে,বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ১২হাজার গাছের চারা লাগানো হয়।এসব গাছের মধ্যে আছে,জলপাই,কাঁঠাল,কালোজাম, লিচু, কমলা,আম,জাফরান,চন্দন,কফি,অর্জুন উল্লেখ্যযোগ্য।বাটালী হিল বাংলাদেশ সরকারের গণপূর্ত বিভাগের নিজস্ব সম্পত্তি।উক্ত, পাহাড়ের চূড়ায় গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অফিস,ডিআইজির বাংলো,ও বেশ কিছু বাংলো রয়েছে,তাছাড়া বেশ কিছু সিঁড়ি আছে যেখানে নিরিবিলি বসে আপনি উপভোগ করতে পারেন বাটালী হিলের নান্দনিক সৌন্দর্য। আমাদের চট্টগ্রামের বাটালী হিল প্রকৃতির সবুজ রাজকন্যা,অবসরে আপনিও আসতে পারেন প্রিয়জন অথবা পরিবারের সাথে।যারা চট্টগ্রামের বাইরে থাকেন তারাও আসতে পারেন অপরূপ বাটালী হিলে,উপভোগ করতে পারেন বাটালী হিলের নান্দনিক রূপ।সেই সাথে আসার পথে নিচে যে কোনও দোকান বা রেস্টুরেন্টে আপনি অবশ্যই গরম কফি বা চা পান করে ফিরতে পারেন বাসায়। অন্যদিন অন্য আরেকটি পর্বে আবারও থাকবো আপনাদের কাছাকাছি।