নোয়াখালী সংবাদদাতা:
নোয়াখালীর সদর উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়নে জমির বিবেদমান মিটাতে দেয়া ৫০ হাজার টাকা ও দলিল-দস্তাবেজ ফেরত চাইতে বাড়িতে গেলে এক বৃদ্ধ কৃষককে মারধর করে তার জমি-জমা দখলে নেয়ার অভিযোগ ওঠে স্থানীয় যুবদল নেতা মো.আজাদের বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত আজাদ আন্ডারচর ইউনিয়ন যুবদলের আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব। ভুক্তভোগী কৃষক একই ইউনিয়নের পশ্চিম মাইজচরা গ্রামের বাসিন্দা মো.জহির আলম (৫১)।
রোববার (২০ এপ্রিল) সকাল ১০টায়, নোয়াখালী প্রেসক্লাবের পুরাতন ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ওই কৃষক। এর আগে, গত সোমবার উপজেলার আন্ডারচর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে এ ঘটনা ঘটে। গতকাল শনিবার দুপুরে মারধর করার ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে জনমনে দেখা গেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া
কৃষক জহির আলম জানান, উপজেলার মাইজচর এলাকায় তাদের পৈতৃক সম্পত্তি ২ একর ৯০ শতক জমি দীর্ঘদিন ধরে তারা ভোগদখলে ছিলেন। একসময় ইউনিয়ন কৃষকলীগের সভাপতি মনসুর আহমেদ মায়া বর্গা দেওয়ার নাম করে ওই জমি নিজের দখলে নিয়ে নেন। এরপর ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর আন্ডারচর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আজাদ জমির সমস্যার সমাধান করবেন বলে আশ্বাস দিয়ে ভুক্তভোগী কৃষকের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ও জমির কাগজ পত্র নেন। দীর্ঘ দিন পেরিয়ে গেলেও সমস্যার সমাধান করেননি। কিন্তু পরবর্তীতে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো তার নম্বর ব্লক করে দেন।
জহির আলম অভিযোগ করে বলেন, গত সোমবার চারদিন আগে আজাদ মেম্বারের বাড়ি গিয়ে জমির কাগজ পত্র ও টাকা চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে মারধর করেন।“প্রথমবার আমাকে মারলেও আমি ভিডিও ধারণ করতে পারিনি। পরে দ্বিতীয়বার যখন তিনি আবার মারধর করেন, তখন আমি মোবাইলে ভিডিও চালু রেখে পকেটে রাখি। সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর, গত ১৭ এপ্রিল আজাদ মোল্লার নেতৃত্বে একটি দল স্খানীয় আনন্দবাজার এলাকায় আমাকে ( জহির আলমকে) ডেকে নিয়ে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে এবং ক্ষমা চাইতে বাধ্য করে। জহির আলম বলেন, “তারা আমাকে বলে, ক্ষমা না চাইলে তুলে নিয়ে যাবে। আমি বাধ্য হয়ে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাই।”
যোগাযোগ করা হলে আন্ডারচর ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য সচিব মো. আজাদ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওই কৃষক স্বীকার করেছে আমাকে কোন কাগজপত্র ও টাকা দেয়নি এমন একটি ভিডিও আমার কাছে আছে। ঊনার বাড়ি চন্দ্রগঞ্জ থানাধীন। ঊনি আমার এলাকায় এসে জমি জবর দখলের চেষ্টা করছে। দুটি বহিরাগত পক্ষ এ জমির মালিকানা দাবি করছে। দুজনেরই কাগজপত্র ফেলে দেওয়ার মত না। আমি তাকে মারধর করিনি শুধু বলেছি তুই বাড়ি থেকে বের হয়ে যা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নোয়াখালী জেলা যুবদলের সভাপতি মঞ্জুরুল আজিম সুমন বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।