ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেছেন, ঐতিজাসিক ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচার হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে সরানো হয়েছে নতুন আরেক স্বৈরাচারকে স্বাগত জানাতে নয়। বৈষম্যমু্ক্ত একটি কল্যাণরাষ্ট্র গঠনই ছিল জুলাই বিপ্লবের মূল চেতনা। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি গণঅভ্যুত্থানের পর নব্য ফ্যাসিস্ট শক্তির আবির্ভাব হচ্ছে। আজকের এই জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে আমরা দীপ্তকণ্ঠে বলতে চাই, দেশের মানুষ চাঁদাবাজমুক্ত নতুন বাংলাদেশ চায়। যেকানে দুর্নীতি, দুঃশাসন, খুন ধর্ষণ ঘটবে না। এর ব্যত্যয় ঘটলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ আপামর জনসাধারণকে সাথে নিয়ে ফের রুখে দাঁড়াবে।
৫ আগস্ট ( মঙ্গলবার) বিকালে চট্টগ্রাম নগরের বিপ্লবী উদ্যানে অনুষ্ঠিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের স্মরণে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগরের উদ্যোগে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ইসলামী আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি জান্নাতুল ইসলাম ও মহানগর সেক্রেটারি আল মুহাম্মদ ইকবালের সঞ্চালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান আরো বলেন, ‘দেশের মানুষ বিগত ৫৩ বছর ধরে তাদের ভোটের সঠিক মূল্যায়ন পাইনি। জনগণের ভোটে যারাই ক্ষমতায় গিয়েছে তারাই দেশকে লুটেপুটে খেয়েছে। শুধু তাই নয় তারা সুজলা সুফলা এই বাংলাদেশকে একটি তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত করেছে।
অথচ নিজেরা আঙ্গুল ফুলে কলা গাছে পরিণত হয়েছে। অতএব ভোটের সঠিক মূল্যায়নের লক্ষ্যে আগামীতে জাতীয় নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে দিতে হবে। উচ্চকক্ষের সাথে সাথে নিম্নকক্ষে পিআর পদ্ধতি বাস্তবায়ন না হলে আবারও ফ্যাসিস্টের পথ উন্মুক্ত হবে, কালো টাকার ছড়াছড়ি চলবে এবং জনগণের কাঙ্খিত মুক্তি আসবে না। তাই দেশের কল্যাণে পিআর পদ্ধতির বিকল্প নেই।’
তিনি জুলাই আন্দোলনে যারা শহিদ হয়েছেন, বক্তব্যে তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।
সভাপতির বক্তব্যে আলহাজ্ব জান্নাতুল ইসলাম বলেন, ‘চট্টগ্রাম নগরীকে একটি সুন্দর ও আধুনিক নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে অতীতে যারা ক্ষমতায় এসেছে, তারা সবাই ব্যর্থ হয়েছে। চট্টগ্রামের মানুষ এবার ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশকে আপনারা বিশ্বাস করে হাত পাখায় ভোট দিন। আমরা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আধুনিক মেগাসিটি হিসেবে চট্টগ্রামকে গড়ে তুলবো ইনশাআল্লাহ। চট্টগ্রাম হবে জলাবদ্ধতামুক্ত এবং চাঁদাবাজমুক্ত একটি নিরাপদ নগরী।’
সমাবেশের শুরুতে জুলাই যোদ্ধা বীর শহীদদের স্মরণে খতমে কুরআন ও দোয়ার আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড থেকে গণমিছিলসহকারে সমাবেশে যোগদানকারী হাজার হাজার নেতাকর্মীকে স্বাগত জানানো হয়। এরপর জুলাই বিপ্লবে আহতদের পরিবারকে সম্মাননা প্রদান করা হয়
সামাবেশে বীর চট্টলার শহীদদের স্বজনরা ও আহত যোদ্ধাদের মধ্যে মুহাম্মদ সাইম, জিয়াউর রহমান, আরিফুল ইসলাম, মুহাম্মদ হানজালা ও মুহাম্মদ আরিফ উপস্থিত ছিলেন।
আরো উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি নূরুল আমিন, এনসিপি চট্টগ্রাম অঞ্চল তত্ত্বাবধায়ক জোবায়ের হাসান আরিফ, স্মরণে জুলাই গণঅভ্যুত্থান প্রোগ্রাম বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক নাজিম উদ্দীন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগর সহ-সহ-সভাপতি ড.বেলাল নূর আজিজী , জয়েন্ট সেক্রেটারি নজরুল ইসলাম , সহকারী সেক্রেটারি পারভেজ তালুকদার , সাংগঠনিক সম্পাদক ইব্রাহিম খলিল, শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি শরীফ চৌধুরী, চট্টগ্রাম ইসলামী যুব আন্দোলন সভাপতি আল মিজান মুহাম্মাদ নোহেল , ইসলামী ছাত্র আন্দোলন চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি শাহজাহান প্রমুখ।