বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর (সাকা চৌধুরী) মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার চলাকালীন সাক্ষীদের বিদেশ থেকে আসতে না দেওয়ার ‘সাইফার মেসেজ’সহ অন্যান্য মেসেজ উদ্ধার এবং এর সঙ্গে জড়িতদের নাম প্রকাশের দাবিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে লিগ্যাল নোটিশ দেবে তার পরিবার। আগামী রোববার তাদের এই নোটিশ দেওয়ার কথা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বিকেল ৩টায় সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ধানমন্ডির বাসায় এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান তার পরিবারের সদস্যরা। এ সময় তার স্ত্রী, দুই ছেলে এবং মেয়ে উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী। তিনি বলেন, ৭১ সালে আমার বাবা যে দেশের বাইরে ছিলেন, তার সাক্ষী হিসেবে বিচার চলাকালীন চারজন ব্যক্তি বাংলাদেশে আসতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ট্রাইব্যুনাল সেটি নাকচ করে দিয়েছিলেন। যারা ডিফেন্স উইটনেস হিসেবে আসতে চেয়েছিলেন তারা হলেন- মুহিব আরজুমান খান, আম্বার হারুন সায়গাল, ইসহাক খান খাকওয়ানী এবং রিয়াজ আহমেদ নূহ। এই চার ব্যক্তি বাংলাদেশে আসতে না পেরে পরবর্তীতে ইউটিউবের মাধ্যমে তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেছিলেন। তারা যদি আসতে পারতেন, তাহলে তারা এটা প্রমাণ করতে পারতেন যে, আব্বা সে সময় পাঞ্জাব ইউনিভার্সিটিতে ছিলেন।
সেই সাক্ষীদের আসতে না দেওয়ার পেছনে তৎকালীন ফরেন মিনিস্ট্রির কিছু ‘সাইফার মেসেজ’ জড়িত ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশে অনেক মানুষ এখন কথা বলতে, সাহস দেখাতে শুরু করেছেন। অনেকে প্রমাণ নিয়ে আমাদের কাছে আসছেন। এগুলোর মধ্যে একটা বড় জিনিস আমাদের হাতে পৌঁছেছে। এটি হলো, বাংলাদেশের ফরেন মিনিস্ট্রি যখন বিদেশি দূতদের কাছে কোনো মেসেজ পাঠায়, এই মেসেজগুলোকে সাইফার মেসেজ বলা হয়। এই সাইফারগুলোতে বেশিরভাগ সময় কোডেড সিক্রেট থাকে। এই ধরনেরই একটা সাইফার মেসেজ আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে।
মেসেজটির বর্ণনা দিয়ে হুম্মাম বলেন, সাইফার মেসেজের মধ্যে উপরোক্ত সাক্ষী চারজনের নাম উল্লেখ করে বলা আছে, কোনোভাবেই তাদেরকে যেন ভিসা না দেওয়া হয়। এই সাইফার মেসেজ এর মাধ্যমে প্রমাণ হচ্ছে, আমাদের সঙ্গে একটা খুব বড় অন্যায় হয়েছে। আমার বাবাকে তারা কোনোভাবেই ফেয়ার জাস্টিসের ধারেকাছেও নিতে পারেনি। আমার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে। এটা একটা জুডিশিয়াল মার্ডার ছিল এবং এটার সঙ্গে আওয়ামী রেজিমের সরকার সরাসরি জড়িত ছিল।
লিগ্যাল নোটিশ পাঠানোর কথা জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা বর্তমান ফরেন মিনিস্ট্রিকে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠাবো। আমরা তাদের কাছে দাবি করছি, এই সাইফার মেসেজগুলোকে ডি-ক্লাসিফাই করে দেওয়া হোক। আমার বাবার ট্রায়ালের সঙ্গে জড়িত যতগুলো সাইফার মেসেজ আছে, প্রতিটাকেই যেন ডি-ক্লাসিফাই করে দেওয়া হয় এবং সেগুলোকে যেন আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
তিনি দাবি করেন, আমরা বর্তমান সরকারের কাছে আরেকটা জিনিস চাই, এই সাইফার মেসেজের সঙ্গে আওয়ামী লীগের ফরেন মিনিস্ট্রির যারা যারা জড়িত ছিল তাদের সবার নাম যেন প্রকাশ করা হয়।