জয় দিয়ে সূচনা করতে চাই টাইগাররা

জয় দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু করতে চায় বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। টি-টোয়েন্টি ভার্সনে চলমান ১৭তম আসরে আগামীকাল নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হংকং।

আবুধাবির জায়েদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে হংকংয়ের বিপক্ষে টাইগারদের ম্যাচটি শুরু হবে শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে আটটায়।

টি-টোয়েন্টিতে এখন পর্যন্ত একবারই মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-হংকং। ২০১৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত ম্যাচে হংকংয়ের কাছে ২ উইকেটে হেরেছিল বাংলাদেশ। তবে এশিয়া কাপে হংকংয়ের বিপক্ষে কাল ফেভারিট হিসেবে খেলতে নামবে টাইগাররা।

ঘরের মাঠে দুর্বল হংকংয়ের কাছে হেরে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছিল বাংলাদেশ। এরপর অবশ্য বাংলাদেশের ক্রিকেটে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে।

ওয়ানডে ক্রিকেটে দুর্দান্ত দলে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের মেলে ধরতে পারছিল না তারা। সম্প্রতি এই ফরম্যাটে জয়ের ধারাবাহিকতায় রয়েছে তারা। টানা তিনটি দ্বিপাক্ষিক সিরিজ জিতে এশিয়া কাপ শুরু করবে টাইগাররা।

শ্রীংলকা-পাকিস্তান এবং নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে সর্বশেষ তিন সিরিজের জয়, এশিয়া কাপে দলকে অনুপ্রাণিত করবে বলে জানান বাংলাদেশ অধিনায়ক লিটন দাস।

তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি আমরা এশিয়া কাপের জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত। টুর্নামেন্টটি খুবই চ্যালেঞ্জিং হবে কারণ সব দলই ভালোভাবে প্রস্তুতি নিয়েই এখানে এসেছে। আমরা চ্যালেঞ্জ নিতে মুখিয়ে আছি। এটা নিশ্চিত, আমরা আমাদের শতভাগ দেব।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা টানা তিনটি সিরিজ জিতেছি এবং এটি অবশ্যই আমাদের অনুপ্রাণিত করবে। আমরা আমাদের সেরা ক্রিকেট খেলার চেষ্টা করব।’

এশিয়া কাপে ‘বি’ গ্রুপে হংকংকে সহজ প্রতিপক্ষ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই হংকংয়ের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে জয়ের চেষ্টা করবে বাংলাদেশ। কারণ টুর্নামেন্টে পরবর্তীতে ভাল রানরেট বড় প্রভাব রাখতে পারে। বাংলাদেশ ও হংকং ছাড়া এই গ্রুপের অন্য দুই দল শ্রীলংকা ও আফগানিস্তান।

এশিয়া কাপে তিনবার ফাইনাল খেলেও শিরোপা জিততে পারেনি বাংলাদেশ। প্রথমবার ২০১২ সালে পাকিস্তানের কাছে ২ রানে হেরে হৃদয় ভাঙ্গে টাইগারদের।

এরপর ২০১৬ এবং ২০১৮ সালে ভারতের কাছে ফাইনালে হেরে যায় বাংলাদেশ। ২০১৮ সালের ফাইনালে সেঞ্চুরি করেছিলেন লিটন। কিন্তু তার ঐ সেঞ্চুরি দলের হার এড়াতে পারেনি।

তবে লিটনের বিশ্বাস এবার অধরা ট্রফি ধরা দেবে। তিনি বলেন, ‘আমরা এখনও শিরোপার স্বাদ পাইনি। তবে সেটা একটা ইতিহাস। আর ইতিহাস তো ভাঙার জন্যই তৈরি হয়।’

ইতোমধ্যেই আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু করেছে হংকং। আফগানদের ছুঁড়ে দেওয়া ১৮৯ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৯ উইকেটে ৯৪ রানের বেশি করতে পারেনি তারা। ফলে ৯৪ রানের হার দিয়ে আসর শুরু করেছে হংকং।

বাংলাদেশের বিপক্ষে এ পর্যন্ত পাওয়া একমাত্র জয় থেকে অনুপ্রাণিত হচ্ছেন হংকং অলরাউন্ডার নিজাকাত খান। ম্যাচে ১৯ রানে তিন উইকেট দলের জয়ে বড় অবদান রেখেছিলেন তিনি।

নিজাকাত বলেন, ‘এটি ছিল খুবই বিশেষ একটি অর্জন। কারণ আমরা বাংলাদেশের মাটিতে তাদেরকে হারিয়েছিলাম। আমরা খুব ভালো খেলেছিলাম। বিশেষ করে আমি ভালো করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের স্পিনাররা খুব ভালো করেছিল। হ্যাঁ, এটা উপভোগ করার মতো একটা স্মৃতি। আমার সত্যিই মনে আছে নাদিম আহমেদ আর আমি ভালো বোলিং করেছি। বাংলাদেশকে হারাতে আমাদের জুটিবদ্ধ বোলিং দারুণ ভূমিকা রেখেছিল।;

২০১৪ এশিয়া কাপ খেলা কেউই এবারের বাংলাদেশের দলে নেই। সেই ম্যাচের পর প্রথমবারের আবারও দেখা হচ্ছে দু’দলের।

অতীতে পুনরাবৃত্তি আবারও করতে পারবেন বলে বিশ্বাস করেন নিজাকাত। তিনি বলেন, ‘অবশ্যই আমাদের সেই বিশ্বাস আছে। আমাদের এমন খেলোয়াড় আছে যারা ম্যাচ জিততে পারে। আর টি-টোয়েন্টি এমন একটি খেলা যেখানে এক বা দুই ওভারে ম্যাচের চিত্র বদলে দেওয়া যায়। টি-টোয়েন্টি খুবই আকর্ষণীয় খেলা। কেউ জানে না কি হতে পারে। আমাদের দল ভালোভাবে প্রস্তত।’

বাংলাদেশ দল : লিটন দাস (অধিনায়ক, উইকেটরক্ষক), তানজিদ হাসান, পারভেজ হাসান ইমন, সাইফ হাসান, তাওহিদ হৃদয়, জাকের আলি, শামিম হোসেন, নুরুল হাসান, মাহেদি হাসান, রিশাদ হোসেন, নাসুম আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, তানজিম হাসান, শরিফুল ইসলাম, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন।

হংকং দল : ইয়াসিম মুর্তজা (অধিনায়ক), বাবর হায়াত (সহ-অধিনায়ক), জিশান আলি (উইকেটরক্ষক), শহীদ ওয়াসিফ (উইকেটরক্ষক), নিজাকাত খান মোহাম্মদ, নাসরুল্লাহ রানা, মার্টিন কোয়েটজি, আনশুমান রাথ, এহসান খান, কালহান মার্ক, আয়ুশ আশিষ শুক্লা, মোহাম্মদ আইজাজ খান, আতিক উল রেহমান ইকবাল, কিঞ্চিত শাহ, আদিল মাহমুদ, আনাস খান, হারুন মোহাম্মদ আরশাদ, আলি হাসান, গাজানফার মোহাম্মদ, মোহাম্মদ ওয়াহিদ।