সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে নেপাল, নীরব নিস্তব্ধ পথঘাট
নেপালের আইনশৃঙ্খলার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে দেশটির সেনাবাহিনী। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে বিধিনিষেধমূলক নির্দেশ জারি করে তারা। যা বিকা ৫টা পর্যন্ত চলবে। এরপর সন্ধ্যা থেকে পরদিন সকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি থাকবে।
সেনাবাহিনী জানিয়েছে, বিক্ষোভের আড়ালে ভাঙচুর ঠেকাতে এ ধরনের পদক্ষেপ প্রয়োজন ছিল। এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনী সতর্কতা দিয়ে বলেছে, “এ সময়ে যেকোনো ধরনের বিক্ষোভ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, অথবা ব্যক্তি ও সম্পত্তির ওপর হামলাকে অপরাধমূলক কাজ হিসেবে গণ্য করা হবে এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এছাড়া ধর্ষণের হুমকি ও নির্দিষ্ট ব্যক্তির ওপর হামলার ব্যাপারেও সতর্কতা দিয়েছে সেনাবাহিনী।
প্রয়োজনীয় সেবা— যারমধ্যে আছে অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার ইঞ্জিন, স্বাস্থ্যকর্মী এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা বিধিনিষেধমূলক নির্দেশের বাইরে থাকবে।
গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগের পর নেপালে অস্থিরতা তৈরি হয়। পার্লামেন্ট ভবন, আদালত, মন্ত্রীদের ঘরবাড়িসহ বহু জায়গায় অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এরপর রাত ১০টার দিকে দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেয় সেনাবাহিনী।
গত সোমবার নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ১৯ বিক্ষোভকারী নিহত হয়। এরপর সাধারণ মানুষ ক্ষোভে ফুসে ওঠেন। মঙ্গলবার সকালে তারা বিভিন্ন জায়গায় জড়ো হতে থাকেন। এ সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে কেপি শর্মা ওলিকে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বলেন দেশটির সেনাপ্রধান।
কয়েক দশকের দুর্নীতি ও সেগুলোর বিচার না করা, ফেসবুক ইউটিউবসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করার জেরে প্রথমে বিক্ষোভ শুরু হয়। প্রথমে এটি শান্তিপ্রিয় ছিল। তবে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে বিক্ষোভকারীরা নিহত হলে এটি সহিংস রূপ নেয়।
বুধবার সকাল থেকেই সেনারা কাঠমান্ডু ও অন্যান্য শহরে অবস্থান নেন। ওই সময় কড়া নিয়মকানুন জারির পাশপাশি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার কাজ শুরু করেন তারা। সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর আজ সকাল থেকেই শান্ত হয়ে আসে নেপাল। সাধারণ মানুষও ঘরবাড়ি থেকে বের হননি। নেপালের সর্বত্র এখন অস্বাভাবিক নিরবতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
যেসব সরকারি ভবনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল সেগুলোর আগুন নেভানোর চেষ্টা শুরু হয় বুধবার সকাল থেকে। গতকাল ফায়ার সার্ভিসের গাড়িও আটকে রাখেন বিক্ষোভকারীরা।
সূত্র: টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়া