অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় রংপুরে এক পুলিশ কর্মকর্তার এবং পলিটেকনিকের সাবেক ইন্সট্রাকটরের বাড়ি ও মার্কেটসহ এক একর জমি জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকেলে আদালতের নির্দেশে এ সম্পদ জব্দ করে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদক রংপুরের সমন্বিত কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক জয়ন্ত সাহা।
জানা গেছে, বর্তমানে দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুরে চাকরিরত পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) হিসেবে দুলাল হোসেন রংপুর নগরীর নিউ জুম্মাপাড়ায় তিনতলা বাড়ি নির্মাণ করে পরিবার নিয়ে বাস করছেন। তিনি বাড়ির একাংশ ভাড়াও দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে প্রায় দেড় কোটি টাকা মূল্যের জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে একাধিকবার সম্পদ অর্জনের উৎস জানতে চেয়েছিল দুদক। কিন্তু তিনি ওই বাড়ি নির্মাণের অর্থের উৎসসহ প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে পারেননি।
অন্যদিকে, একই এলাকায় অবস্থিত আবু হেনা আশিকুর রহমান নামে রংপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সাবেক ইন্সট্রাকটরের বিরুদ্ধে এক একরের বেশি জমিতে মার্কেট, বাড়িসহ অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণ করার অভিযোগ রয়েছে। তিনি প্রায় ৫ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এই দুজনের সম্পদ যাতে অন্য কারও কাছে হস্তান্তর করতে না পারেন সে জন্য রংপুরের বিশেষ জজ আদালতে ক্রোক করার আবেদন করে দুদক। আদালত তাদের সম্পদ ক্রোক করার আদেশ দেয়ায় দুলাল হোসেন ও আবু হেনা আশিকুর রহমানের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ক্রোক করে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দেয় দুদকের বিশেষ টিম।
এই অভিযানে দুদকের সহকারী পরিচালক বেলাল হোসেন ও সমন্বিত কার্যালয়ের অন্য কর্মকর্তারা অংশ নেন।
স্থানীয় বাসিন্দা হাশেম আলী বলেন, বছরের পর বছর ধরে দেখি সরকারি চাকুরেরা হঠাৎ করেই বহুতল বাড়ি, মার্কেট বানাচ্ছে। অথচ তাদের বৈধ আয় দিয়ে এসব সম্ভব না। দুদক এবার যেভাবে মাঠে নেমেছে, তাতে আশা জাগে দুর্নীতিবাজরা শাস্তি পাবে।
রংপুর আইডিয়াল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির প্রধান শাকিনুর আলম বলেন, এই অবৈধ সম্পদের বিষয়ে আমাদের প্রতিষ্ঠানের মালিকের বিরুদ্ধে তার খুব কাছের লোক দুদকে অভিযোগ করেন। আগে ওই জায়গাটিতে রিট পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের কার্যক্রম চালানো হতো, এখন আর হচ্ছে না।
রংপুর দুদকের উপসহকারী পরিচালক জয়ন্ত সাহা বলেন, ওই দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের সুনির্দিষ্ট অভিযোগে তদন্ত চলছে। সম্পদগুলো যাতে অন্য কারও কাছে হস্তান্তর করতে না পারে সে জন্য আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী ক্রোক করা হয়েছে। অভিযুক্ত দুই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ হলে অভিযোগপত্র দাখিল করা হবে। এরপর আদালতে নিয়মিত বিচার প্রক্রিয়া শুরু হবে।