থামছে না মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য, সবজির বাজারে আগুন

টানা কয়েক দিনের বৃষ্টিতে বাজারে প্রায় সব ধরনের সবজির দাম বেড়েছে। শীতের আগাম সবজির দাম তুলনামূলক বেশি বেড়েছে। শিমের দাম এক সপ্তাহের ব্যবধানে ১৫০ টাকা থেকে ২৪০ টাকা পর্যন্ত উঠেছে। বাজারে সবচেয়ে বেশি সংকট ও দাম বাড়তি দেখা গেছে কাঁচা মরিচের। মসলাজাতীয় এই পণ্যটির দাম সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় ১০০ টাকা বেড়ে ৩২০ টাকায় উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) রাজধানীর মুগদা, মানিকনগর, ধলপুর ও গোপীবাগ বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।

বাজারে সবজির মধ্যে কেবল কাঁচা পেঁপে কম দামে ২০-২৫ টাকা কেজি মূল্যে বিক্রি হচ্ছে। আর কচুর মুখি ৫০ টাকা কেজিতে পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া শসা, মিষ্টি কুমড়া ও ধুন্দল ৬০ টাকা থেকে ৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। বাকি প্রায় সব সবজির দাম ৮০ টাকার উপরে রয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ সবজির দামই কেজিতে ১০-২০ টাকা বেড়েছে সপ্তাহের ব্যবধানে।

আজকের বাজারে বরবটি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়, করলা প্রতিকেজি ১০০ টাকায়, উস্তা ১২০ টাকা, পটল ৮০ টাকায়, চিচিঙ্গা ৮০ টাকায়, কাঁকরোল ৮০ টাকা, বেগুন (লম্বা) ১০০ টাকা এবং বেগুন (গোল) প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা দরে।

এছাড়া প্রতি কেজি গাজর ১২০ টাকা, কঁচুর লতি প্রতি কেজি ৮০-১০০ টাকা, ঢেঁড়স প্রতি কেজি ৮০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ১২০-১৪০ টাকা, লাউ প্রতি পিস (ছোট ও বড়) ৮০-১২০ টাকায় এবং জালি প্রতি পিস ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আজকের বাজারে কাঁচা মরিচ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে সর্বনিম্ন ২৮০ টাকা থেকে উপরে ৩২০ টাকা পর্যন্ত। এক সপ্তাহ আগেও কাঁচা মরিচের দাম ছিল ২০০ থেকে ২২০ টাকার মধ্যে। সপ্তাহের ব্যবধানে এই পণ্যটির দাম বেড়েছে প্রায় ১০০ টাকা।

মানিকনগর পুকুরপাড় বাজারের সবজি বিক্রেতা রমজান বলেন, ‘পাইকারি বাজারে কাঁচা মরিচের ব্যাপক সংকট তৈরি হয়েছে। বৃষ্টিতে চাষিদের ফলন নষ্ট হয়েছে। শুনেছি, ভারত থেকেও নাকি মরিচ আসা বন্ধ রয়েছে। তাই এই সংকট তৈরি হয়েছে। এক পাল্লা (৫ কেজি) এখন কিনতে হচ্ছে ১২০০ থেকে ১৩০০ টাকায়। এক সপ্তাহ আগেও ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় কিনে আনতে পারতাম।’

এদিকে রেগুলার সবজির পাশাপাশি শীতকালীন আগাম সবজির দামও বাজাবে বাড়তে দেখা গেছে। প্রায় একমাস আগে বাজারে নতুন আসা শিমের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে ৭০-৮০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি ২৪০ টাকায় উঠেছে। গত সপ্তাহ এই সবজিটির দাম ১৬০-১৭০ টাকায় ছিল। আগাম ছোট সাইজের ফুলকপি ও পাতাকপি প্রতিপিস বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকায়। গত সপ্তাহে যা ৬০-৭০ টাকায় পাওয়া যেত। আর মুলা বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৮০ টাকায়। গত সপ্তাহে যা ৬০ টাকায় পাওয়া যেত। এছাড়া প্রতি কেজি টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা কেজি দরে।

সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে বিভিন্ন ধরনের শাকের দামও। পুঁইশাক প্রতি আঁটি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, এবং কুমার শাকের আঁটি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। এছাড়া প্রতি আঁটি লালশাক ২৫-৩০ টাকায়, কলমি শাক ২০ টাকা, পালংশাক ৪০ টাকা, পাটশাক ৩০ টাকায়, কচুশাক ৩০ টাকা, মুলা শাক ২৫ টাকা এবং ডাঁটা শাক প্রতি আঁটি ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

মুগদা বাজারে ভ্যান গাড়িতে শাকের ব্যবসায়ী আজাদ বলেন, ‘গত সপ্তাহে যে শাক ৩ হাজার টাকায় কিনতে পারতাম। এখন তা ৫ হাজার টাকায় কিনতে হচ্ছে। চাষিদের জমিতে বৃষ্টির পানি জমে শাক নষ্ট হয়ে গেছে। পাইকারি বাজারে শাক পাওয়া যাচ্ছে না। আগে গাড়িতে উঁচু উঁচু করে শাক কিনে আনতাম, দুদিন ধরে অল্প করে আনতেছি। দাম বেশি হওয়ায় অনেকেই শাক না নিয়ে চলে যায়।’