খুলনা প্রতিনিধি ::
সিডর, আইলা, মহসেন, বুলবুল, আম্ফানের মত ঝড়, জলোচ্ছাবাস মোকাবেলা করেই
দিনরাত কাটে দক্ষিণের খুলনা জেলার কয়রা, পাইকগাছা উপজেলাবাসীর। দুর্যোগের
সময়ে বেড়িবাঁধ উপচে পোল্ডারের মধ্যে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। নড়বড়ে বেড়িবাঁধ
ভেঙ্গে যায়। আপদকালিন মেরামত করা হলেও নির্মিত হয় না টেকসই বেড়িবাঁধ।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে সামুদ্রিক ঘুর্ণিঝড় ও জলচ্ছ্বাস দিনের পর দিন
গেড়ে বসেছে। একদিকে জলচ্ছ্বাসে নষ্ট হচ্ছে ৬০ এর দশকে নির্মিত মাটির
বেড়িবাঁধ। কয়েক দশক বেড়িবাঁধের সংস্কার না করে যেখানে ভাঙন সেখানে যত্রতত্র
মাটির প্রলেপ দেওয়া হচ্ছে মাত্র। কিন্তু বারবার পরিবেশকে তছনছ করছে সিডর, আইলা,
নার্গিস, ফনী, বুলবুল ও আম্পান নামের ঘুর্নিঝড়। উপকূলবাসীর একান্ত দাবি জলবায়ু
সহনশীল টেকসই বেড়িবাঁধ তৈরী করা।
সুন্দরবনের কোল ঘেষে অবস্থান দক্ষিণাঞ্চলের খুলনা জেলার কয়রা ও পাইকগাছা উপজেলার। এ
অঞ্চলের মানুষ যেমন বাঘ আর কুমিরের সাথে লড়াই করে বেঁচে থাকে, তেমনি
প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করে টিকে থাকতে হয়।
গত ২৬ মে বাংলাদেশ উপকূলে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড়‘ রিমাল’। এতে সবচেয়ে বেশি
ক্ষতি হয় উপকূল অঞ্চলের বেড়িবাঁধ। ৬০ এর দশকে নির্মিত এসব বেড়িবাঁধের কিছু
অংশ ভেঙে যায়। লোকালয় প্লাবিত হয়। ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও চিংড়ি ঘেরের ব্যাপক
ক্ষয়ক্ষতি হয়। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে জলবায়ু সহনশীল টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মানের
দাবি উপকূলবাসীর।
পরিবেশ গবেষক ও উন্নয়নকর্মী, গৌরাঙ্গ নন্দী জানান টেকসই বেড়িবাঁধ অর্থাৎ
কংক্রিটের ব্লক দিয়ে বাঁধ নির্মাণ করা। আগে এ অঞ্চলে মাটি দিয়ে নির্মিত হয়
বাঁধ। নদীর বাঁধ ভাঙ্গে মূলত ভাটার টানে। টেকসই বাঁধ হয়ত ব্লক দিযে তৈরি করা যেতে
পারে তবে এটি হলে বাঁধ হযত উপরে টিকে থাককে তবে বাঁধের তলা দিয়ে ভেঙ্গে যাবে।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালযের সচিব মোঃ নাজমুল আহসান জানালেন, উপকূলীয় এলাকা
খুলনা, সাতক্ষীরায় বেড়িবাঁধ রয়েছে যাকে আমরা পোল্ডার বলি। এই পোল্ডারগুলো অনেক
আগের। ফলে এগুলো ঝুকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে ১০টি পোল্ডারে নতুন করে বাঁধ
নির্মাণ করা হয়েছে। পর্যাযক্রমে অন্য পোল্ডারগুলোকেও নতুন করে বাঁধ নির্মাণ করা হবে।
খুলনা জেলায় ৮৭৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। যার মধ্যে কমবেশি দুর্বল হয়ে
পড়েছে কয়েকশ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেয়া তথ্যমতে
২০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ মারাত্বক ঝুঁকিতে রয়েছে।