বরগুনার আমতলীতে পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডে মাদানী নগর সড়কে অবস্থিত ইসমাইল শাহ্ এর মাজারে অনৈতিক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে যাওয়ায় মাজারপূজারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে আলেম ওলামা,ইমাম সমাজ ও তৌহিদী জনতার গায়ে আঘাত করায় মাজার পূজারীদের আস্তানা গুড়িয়ে দিলেন ইমাম সমাজও তৌহিদি জনতা।
গত (১৫ মার্চ,রোববার ) রাত আনুমানিক ১১ ঘটিকার সময় আমতলী ইসমাইল শাহ’র মাজারের বিভিন্ন স্থাপনা ভেঙে গুঁড়িয়ে দেন মুসলিম তৌহিদি জনতা।
জানাগেছে,ইসমাইল শাহ্ এর মাজারে অনৈতিক কর্মকান্ডে প্রতিবাদে আমতলী ইমাম সমাজ ও তৌহিদি জনতারা জিজ্ঞেস করলে মাজারপূজারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে আলেম ওলামা ও তৌহিদী জনতার গায়ে আঘাত করায় মাজার পূজারীদের আস্তানা গুড়িয়ে দিলেন ইমাম সমাজও তৌহিদি জনতা।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আমতলী ইসমাইল শাহ্ মাজারটি প্রায় ৩০ বছর পূর্বে অবস্থিত।তিনি আমরাগাছিয়া নামক এলাকায় মৃত্যবরন করেন।তবে তার দাফন সম্পন্ন করেন আমতলী পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডে।আর সেখান থেকে গড়ে উঠে মাজারের নাম সহ ও গুনকির্তন। পরবর্তীতে এলাকার কিছু কুচক্রী মহল ব্যবসা করার উদ্দেশ্যে কবরটি মাজারে রূপ দেয়। তারপর হতে আস্তে আস্তে কবরটি একটি মাজারে পরিণত হয়। এবং মাজারের আশেপাশে আরোও বেশ কয়েকটি টিন সেট স্থাপনা তৈরি করা হয়। মাজারের লোহার সিন্দুকের দান বাক্সে পথচারী, যানবাহনের শ্রমিক এবং মাজারে আগত ব্যক্তিরা প্রতিনিয়ত নগত টাকা দান করত।এসব টাকা দিয়ে চলত বাৎসরিক ওরশ এবং প্রতি সপ্তাহে বৃহস্পতিবার ও বিশেষ বিশেষ ধর্মীয় দিবস গুলোতেও বেশ আয়োজন হতো। প্রতিবছর ৩ দিনব্যাপী ওরশ চলছে। ওরশের নামে রাতভর চলে নারী-পুরুষের পালা গান, গাজা সেবন নারী ও পুরুষের অবাধ মেলামেশা। সরে জমিনে দেখা যায় মাজারের উত্তর পাশে একটি টিনশেড নির্মাণ করা হয়েছে। যেখানে ওরসের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি রাখা হতো। তার ঠিক উত্তরে আরোও একটি টিনশেড বিল্ডিং নির্মাণ করা হয়। যেখানে বিভিন্ন সময় মাজারে আসা পাগল গাঁজা সেবন সহ বিভিন্ন অপকর্ম সহ রাত্রি যাপন করতো।এলাকার মুসলিম তৌহিদি জনতা ও ইমাম সমাজের অভিযোগ আমতলী ইসমাইল শাহ্’র মাজারের আস্তানায় মদ, গাজা , জুয়া, যেনা ব্যভিচার, মাজারে সেজদা (শিরক) জমি দখল সহ এহেন অপকর্ম নাই যা এখানে সংঘটিত হয় না ।
এইসব অপকর্মের বিষয়টি ইতিপূর্বে আমতলী ইউএনওসহ সকল প্রশাসনের দৃস্টি আকর্ষণ করছেন।তবে কোন পরিবর্তন ঘটেনি। বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের চাপের কারণে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
গত (৫ই আগস্ট) সরকার পতনের সাথে সাথে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বদলে যায়। যার ফলে মানুষ অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে পারছে। এরই ধারাবাহিকতায় এলাকার তৌহিদী জনতা, উলামায়ে কেরাম, ছাত্রসমাজ সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ সম্মিলিতভাবে গতকাল ১৬ মার্চ রোববার রাতে আমতলী ইমাম সমাজের আমির মুফতি ও আমতলী ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি ওমর ফারুক জিহাদী’র নেতৃত্বে সকল তৌহিদি জনতার ঐক্যতায় মাজার পূজারীদের আস্তানা ভেঙ্গে আগুন জ্বালিয়ে দেন।
এ বিষয় আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আশরাফুল আলম বিষয়টি তদন্ত করতে আসেন , এ সময়ে এলাকার উলামায়ে কেরাম, তৌহিদী জনতা ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে মাজারের ব্যাপারে যে সমস্ত অভিযোগ উঠেছে তার সমাধানের আশ্বাস দেন।
ওলামায়ে কেরামের পক্ষ থেকে জানানো হয় আগামী মঙ্গলবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে ইউএনও মহোদয়ের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় বসবে। তাদের দাবি অবিলম্বে মাজার নামক ইসলাম বিধ্বংসী ও অনইসলামিক কর্মকান্ডের আতুরঘরের মূলউৎপাদন করতে হবে। অন্যথায় লাগাতার কর্মসূচি চলবে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোন হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। এলাকায় থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: আশরাফুল আলম বলেন,আমরা খবর পেয়ে সাথে সাথে ঘটনাস্থলে দুগ্রুপের লোকজন ডেকে সমাধানের আশ্বাস দেই।
অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল বলেন, আমরা ঐদিন দোয়া দরুদ শেষে বাহিরে নেমে দাঁড়াই,তাৎক্ষণিক
ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি ওমর ফারুক জেহাদী সহ অগণিত আলেম-ওলামারা আসেন।তারা কোনো কথাবার্তা না বলেই মাজার ভাঙ্গা শুরু করেন। আমরা আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সামনে আগাতে চাই।
এব্যাপারে আমতলী ইসলামি আন্দোলনের সভাপতি ও ইমাম সমাজের আমির মুফতি মওলানা ওমর ফারুক জিহাদী জানান,আমরা রমজান মাসে তারাবির নামাজ শেষে আমরা ওই মাজারে অনৈতিক কর্মকান্ডে এ খবর পাই।তখনকার আমরা সকল ইমাম সাহেবরা আলোচনা করলে সেখানে আমাকে ইমামদের আমির বানানো হয় ।পরে আলোচনা শেষে আমরা সকলে ওই মাজারের গদিনিশি এ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান বাবুলের কাছে গেলে তাকে জিজ্ঞেসাবদে তার মাজার পুজারীরা ক্ষিপ্ত হয়ে আমাদের উপর হামলা চালায়।
পরে স্থানীয় তৌহিদি জনতা এ ঘটনা দেখে সইতে না পেরে বিক্ষুব্ধ হয়ে মাজার ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন।