মহানগর সংবাদদাতা:
‘ছাত্রলীগ’ দোষারোপ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ও বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের চট্টগ্রাম মহানগরের সংগঠক শওকত ওসমান তৌকিরকে ওমরগণি এম. ই. এস. কলেজ ছাত্রদলের নেতাদের বিরুদ্ধে মব জাস্টিস তেরী করে মারধরের অভিযোগ ওঠেছে। পরে পাঁচলাইশ থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানা হাজতে নিয়ে আসলে, এম. ই. এস. কলেজ ছাত্রদল নেতা মির্জা ফারুক তাকে মামলায় ফাঁসাতে থানায় জোরজবরদস্তি করে। থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা এগিয়ে আসলে মির্জা ফারুক তোপের মুখে পড়ে মটরবাইক নিয়ে দ্রুত থানা থেকে ছিটকে পড়েন।
জানা যায়, বুধবার (২৬ মার্চ) বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ থানার মিমি সুপার মার্কেটসংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, তৌকির ওসমান টিউশনি শেষ করে বাসায় ফিরছিলেন। প্রবর্তক মোড় থেকে ২ নম্বর গেইটের দিকে যাওয়ার পথে মিমি সুপার মার্কেটের সামনে গলিতে ওমর গণি এমইএস কলেজ শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব মির্জা ফারুকসহ কয়েকজন তাকে ঘিরে ধরেন। ‘ছাত্রলীগ’ বলে গুজব ছড়িয়ে মুহূর্তেই লোক জড়ো করেন তারা। এরপর নির্মমভাবে তৌকিরকে মারধর করা হয়।
ঘটনার শিকার তৌকির জানান, ‘তারা তাকে ছিনতাই করার চেষ্টা করে। তারা চেয়েছিল তাকে এমইএস কলেজ ক্যাম্পাসে নিয়ে যেতে। এর মধ্যে তারা বুকে, পেটে, মুখে লাথি-ঘুষি দেয়। কিন্তু আশেপাশে মানুষজন জড়ো হয়ে গেলে সুবিধা করতে পারেনি।’
পরে উপস্থিত জনতার মধ্যে থেকে একজন জাতীয় জরুরি সহায়তা সেবা ৯৯৯-এ কল দিলে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পাঁচলাইশ থানা-পুলিশ। ছাত্রদল নেতারা এ সময় তৌকিরকে ‘ছাত্রলীগ’ ট্যাগ দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের নেতারা অভিযোগ করেন, পাঁচলাইশ থানা পুলিশ শুরুতে ছাত্রদল নেতাদের কথামতোই তাকে আটকে রাখে। কিন্তু পরে অন্য নেতারা সেখানে পৌঁছানোর পর তৌকিরের পরিচয় জানতে পেরে তাকে ছেড়ে দেয়।
বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির রাজনৈতিক শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক শ্রীধাম শীল বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি থানায় যাওয়ার পর মির্জা ফারুকের সাথে কথা বলি। মির্জা ফারুক জানায়, ছাত্রলীগের একটা ছেলের সাথে শওকতের ৯০ শতাংশ মিল থাকায় তাকে তারা দায়িত্ব নিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে। মির্জা ফারুককে জিজ্ঞাসা করলাম, আপনাকে তল্লাশি চৌকি বসানোর অনুমতি দায়িত্ব কে দিয়েছে? সে বলছে তার কলেজে ছাত্রলীগ স্বাধীনতা দিবসে ফুল দিয়েছে, তাই তার দায়িত্ব হচ্ছে তাদের খুঁজে বের করা।’
এ ঘটনায় মির্জা ফারুকসহ দুজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মির্জা ফারুক চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সদস্যসচিব শরিফুল ইসলাম তুহিনের অনুসারী। পুলিশ ইতোমধ্যে ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ ও দোষীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সংগঠক আজাদ হোসেন বলেন, ‘ছাত্রদলকে এই ছিনতাইকারীদের ব্যাপারে জবাবদিহি করতে হবে। কাউকে ছাত্রলীগ বলে পিটানোর এখতিয়ার তাদের কে দিয়েছে সেটার কৈফিয়ত তাদেরকে দিতে হবে।’