রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) প্রতিষ্ঠার ৬৩ বছরের ইতিহাসে প্রথম নারী শিক্ষার্থী হিসেবে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তাসিন খান।
শুক্রবার সকালে এক ফেসবুক পোস্টে এ প্রার্থীতার ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী তাসিন খান।
জানা গেছে, ১৯৬৪ সালে রাকসু প্রতিষ্ঠার পর থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত ১৪টি নির্বাচনে কোনো নারী প্রার্থী বা নির্বাচিত ভিপি দেখা যায়নি। এরপর দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আগামী ২৫ সেপ্টেম্বরে রাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে ছাত্রী হলের একাধিক ছাত্রীও কেন্দ্রীয় সংসদের শীর্ষ পদে প্রার্থীতা ঘোষণা করেছেন। তবে রাকসুতে শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ পদ ভিপিতে তাসিন খান প্রথম নারী হিসেবে প্রার্থীতার ঘোষণা দিয়েছেন।
ব্যক্তিগত টাইমলাইনে দেওয়া ফেসবুক পোস্টে তাসিন খান লেখেন, ‘আমরা রক্তক্ষয়ী জুলাইয়ের সাক্ষী হয়েছিলাম। আন্দোলনে যখন আবাসিক হলগুলো বন্ধ করে শিক্ষার্থীদের বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়, সেই সংকটকালে আমি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক পরিষদে যুক্ত হই। বিশ্বাস করি ৫ আগস্ট পরবর্তী এই জীবনে আমি আমার বোনাস আয়ু পার করছি।’
তাসিন খান লেখেন, ‘রাকসু একটি ঐতিহাসিক সুযোগ আমাদের কাছে। এর গুরুত্ব উপলব্ধি করেই আমি আমার দক্ষতার জায়গা থেকে কিছু পরিকল্পনা সমেত এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছি। সকল ঝুঁকি বিবেচনায় রেখে আগাচ্ছি। বাকিটা পরিস্থিতির উপর নির্ভর।’
তিনি আরও লেখেন, ‘আমি চাই এমন একটি রাকসু, যেখানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, সাংস্কৃতিক বহুত্ববাদ এবং মানবিক মূল্যবোধের চর্চা হবে প্রতিদিনের বাস্তবতা। দীর্ঘদিন ধরে অচল থাকা এই প্লাটফর্মকে সক্রিয় ও কার্যকর করতে আমি আসন্ন রাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে প্রার্থীতা ঘোষণা করছি।’
এ বিষয়ে তাসিন খান বাসস’কে বলেন, জেনে অবাক হয়েছি গত ৬৩ বছরের ইতিহাসে আমি প্রথম নারী ভিপি প্রার্থী। আমি মনে করি এইটা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য হতাশার বিষয়। এখানে শুধু রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনগুলোর অংশগ্রহণই স্বতঃস্ফূর্ত। সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করতে এখানে মানুষের সংকট। এই অবস্থা নিয়ে আলোচনাকালে শুভাকাঙ্খীদের পরামর্শ ও উৎসাহ থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
তিনি বলেন, রাকসু নির্বাচন ঘিরে এডুকেশনের শিক্ষার্থী হিসেবে একটা ইশতেহার প্রস্তুত করেছি। এখানে শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করাই আমার প্রথম প্রায়োরিটি।
আবাসন সমস্যা, নিরাপত্তা, হাইজিন থেকে শুরু করে যাবতীয় সমস্যা এইটার সঙ্গে ইন্টারকানেক্টেড। আমি বিজয়ী হলে সব শিক্ষার্থী ভাইবোনদের জন্য কাজ করব।