কানে পেন্সিল রাখে বলে বাকলিয়াবাসীকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করার সুযোগ নেই : চসিক মেয়র 

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, বাকলিয়ার মানুষের কানে পেন্সিল থাকতো বলে একসময় চট্টগ্রামের একজন রাজনৈতিক নেতা ঠাট্টা তামাশা করতো। অথচ ২০১০ সালের মেয়র নির্বাচনে বাকলিয়ার তিন ওয়ার্ডে সদ্য বিএনপিতে যোগ দেওয়া মনজুর আলম আওয়ামী লীগের প্রার্থী মহিউদ্দিন চৌধুরীকে ২০ হাজার ভোটে পরাজিত করেছিল। তাই এখন কানে পেন্সিল রাখে বলে বাকলিয়াবাসীকে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করার সুযোগ নেই। কারণ এখন বাকলিয়ার সবাই শিক্ষিত। এখানে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক, উপাচার্য নছরুল কদির এবং চট্টগ্রামের মেয়র সবাই বাকলিয়ার। বাকলিয়াবাসী যেটা সিদ্ধান্ত নেয়, সেটাই বাস্তবায়ন হয়। বাকলিয়াবাসী সংসদ সদস্যও বানাতে পারে, মেয়রও বানাতে পারে।

তিনি শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বাকলিয়া মজিদিয়া ইসলামিয়া আলিম মাদ্রাসা মাঠে বাকলিয়ার কৃতি সন্তান চট্টগ্রাম প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চান্সেলর অধ্যাপক ড. এস এম নছরুল কদিরকে গ্রাম কল্যাণ মিশনের পক্ষ থেকে দেওয়া গুনীজন সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, শহীদ জিয়া এক সময় বলেছিলেন, আট কোটি মানুষের ষোলো কোটি হাত। এখন আমাদের ষোলো কোটি মানুষ, অর্থাৎ বত্রিশ কোটি হাত দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। যখন এ ধরনের চিন্তা ও প্রবণতা সমাজে বিকশিত হবে, তখনই দেশের জন্য বাস্তব উন্নয়ন সম্ভব হবে।

তিনি আরও বলেন, বাকলিয়া থেকেই তাঁর শিক্ষাজীবন ও রাজনৈতিক জীবনের সূচনা। বাকলিয়ার আলো বাতাসে বেড়ে ওঠার স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন, আমি ক্লাস ওয়ান থেকে ফাইভ পর্যন্ত বাকলিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়েছি। এরপর বাকলিয়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ এবং পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করেছি। রাজনীতির পথচলাও শুরু হয়েছে এখান থেকেই।

নিজের রাজনৈতিক পথপরিক্রমা তুলে ধরে মেয়র জানান, বাকলিয়া থানা বিএনপি’র সদস্য সচিব থেকে শুরু করে ধাপে ধাপে মহানগর বিএনপি এবং পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় দায়িত্ব পালন শেষে বর্তমানে সারা বাংলাদেশের একমাত্র নির্বাচিত মেয়র হিসেবে কাজ করছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, আল্লাহ আমাকে যে সুযোগ দিয়েছেন, তা মানুষের কল্যাণে কাজে লাগানোই আমার লক্ষ্য। আমার একটি সিগনেচার, একটি ফোন কল বা একটি অনুরোধে যদি কারও উপকার হয়, সেটাই আমার কাছে বড় অর্জন।

তিনি আরও বলেন, ন্যায়ের পক্ষে, সত্যের পক্ষে, দুর্নীতির ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েই আমি মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। আজকে আপনারা গর্ব করে বলতে পারেন বাকলিয়ার একজন সন্তান এখন নগরীর মেয়র। এই গর্ব আপনাদের, আমার নয়।

মেয়র তাঁর চলমান উদ্যোগের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বলেন, আমি ক্লিন, গ্রিন, হেলদি ও সেফ সিটি গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছি। নগরীর স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোকে আধুনিকায়ন, ডাক্তারদের উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ এবং পর্যাপ্ত ওষুধ সরবরাহে পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি ময়লা আবর্জনা ব্যবস্থাপনা ও কর্ণফুলী নদীর দূষণ রোধে কার্যকর উদ্যোগ অব্যাহত আছে।

সবশেষে মেয়র বলেন, আমি চাই সবাই একসাথে কাজ করি। আপনাদের সহযোগিতা থাকলে বাকলিয়াসহ সমগ্র চট্টগ্রামকে একটি সুন্দর, সবুজ, স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ নগরীতে রূপান্তরিত করা সম্ভব হবে।

গ্রাম কল্যাণ মিশনের আহবায়ক ডা. মহীনুর মর্তুজা আলম ছাদীর সভাপতিত্বে ও মুহাম্মদ সালাউদ্দিন এবং মোহাম্মদ ওয়াসিমের পরিচালনায় এতে সংবর্ধিত অতিথির বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক ড. এস এম নছরুল কদির। বিশেষ অতিথি ছিলেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. সোহেল মফিজ, এম ই বি গ্রুপের পরিচালক মো. খোরশেদ আলম, গ্রাম কল্যাণ মিশনের সদস্য সচিব কে এম মন্জুর হোসেন, বিএনপি নেতা আব্দুল আজীজ, ইসমাঈল বাবুল, মো. আলমগীর, নুরুল হোসাইন, আব্দুল মতিন কোম্পানি, আব্দুল মান্নান, জাহাঙ্গীর ফরিদ, নাসির উদ্দিন প্রমূখ।